শিশু তালহার বয়স ছিল মাত্র ৪ বছর। বাবা-মায়ের ৩ সন্তানের মধ্যে সে দ্বিতীয়। নেশাগ্রস্ত এক যুবক নিষ্পাপ শিশুটিকে মাথায় পাথর দিয়ে আঘাত করে নির্মমভাবে শিশুটিকে খুন করেন। তার মৃত্যুতে পুরো বাড়ি স্তব্ধ হয়ে গেছে। অকালে বুকের ধন হারিয়ে দিশেহারা তার বাবা-মা ও পরিবার।
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের গুজাউড়া হাছননগরে বাসিন্দা নুরুল হকের দ্বিতীয় ছেলে এনামুল হক মুসা ওরফে তালহাকে একজন বিচারক বানাতে চেয়েছিলেন তার বাবা-মা।
গতকাল (১১ ডিসেম্বর) রাতে নিহত তালহার বাসায় গিয়ে দেখা যায়, তালহার মা সুমি বেগম তার ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে বার বার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন।
স্থানীয়রা অভিযুক্ত নেশাগ্রস্ত আব্দুল হালিমের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, বাবা-মায়ের আদরের সন্তান ছিল তালহা। এলাকার লোকজনও তাকে খুব ভালোবাসত। শিশু তালহা হত্যাকারীর ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, ‘আমরা মেনে নিতে পারছি না যে, তালহা আজ আমাদের ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেছে। তালহাকে যিনি খুন করেছেন তাকে যদি দ্রুত শাস্তি না দেয়া হয় তাহলে আমরা এলাকাবাসী কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করব।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে নিহত শিশুটির বাবা নুরুল হক জানান, ‘কোনো কারণ ছাড়াই আমার ছেলেকে মেরে ফেলা হলো। কী দোষ ছিল আমার অবুঝ ছেলের? এর পেছনে নিশ্চয় কেউ জড়িত আছে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অনুরোধ জানাই, আমার ছেলেকে আমি বিচারক বানাতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সেটা আর হলো না। আমার অবুঝ ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমি আমার ছেলের খুনিদের ফাঁসি চাই।’
তালহা নামের ৪ বছরের এক শিশুকে মাথায় পাথর দিয়ে আঘাত করে নির্মমভাবে খুন করা হয়েছে।
গতকাল (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে গুজাউড়া হাছননগরে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় স্থানীয়রা আব্দুল হালিম নামের এক যুবককে আটক করে পুলিশে দিয়েছে।
হালিমের বাড়ি সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের মঈনপুর গ্রামে। পুরো ঘটনাটি পাশের একটি সিসিটিভির ক্যামেরাতে ধরা পড়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, তালহা গতকাল দুপুরে বাড়ির সামনে খেলা করছিল। এ সময় রাস্তা দিয়ে যাওয়া আব্দুল হালিম নামের নেশাগ্রস্ত ওই যুবক প্রথমে তাকে লাথি দিয়ে মাটিয়ে ফেলে দেয়। এরপর একটি ভারি পাথর দিয়ে মাথায় উপর্যুপরি পাঁচবার আঘাত করে। এতে তাহলার মাথা তেতলে যায় ও প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। পরে পাশের বাড়ির লোকজন গুরুতর অবস্থায় তালহাকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। তার অবস্থার অবনিত হলে সেখান থেকে সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেছেন।