বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় ৪ বছর ৯ মাস বয়সী এক শিশুর গোপনাঙ্গে গরম স্টিলের চামচের ছ্যাঁকা দিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নির্যাতনের শিকার শিশুটিকে গতকাল (২৫ নভেম্বর) রাত ১১টার দিকে উপজেলার নলচিড়া ইউনিয়নের কলাবাড়িয়া গ্রাম থেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিশুটির মামি শাহনাজ বেগমকে (৩৫) গ্রেফতার করা হয়েছে। রাত ৯টার দিকে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।
শিশুটির বাবা বলেন, প্রায় ৭ বছর আগে তার বিয়ে হয়। এর প্রায় ২ বছর তাদের সংসারে এক মেয়ের জন্ম হয়। বছর খানেক পর বিভিন্ন কারণে স্ত্রীর সঙ্গে তার কলহ সৃষ্টি হলে তাদের সম্পর্কে ফাটল ধরে। ছাড়াছাড়ি না হলেও মেয়েকে নিয়ে স্ত্রী তার ভাই রমজান সরদারের বাড়িতে থাকা শুরু করে। রমজান সরদার ও শাহনাজ দম্পতির কোনো সন্তান নেই। প্রথম দিকে তারা মেয়েটিকে আদর যত্ন করলেও বছরখানেক আগে রমজান সরদার ও শাহনাজ দম্পতি আরাফাত নামে এক শিশুকে দত্তক নেয়। এরপর থেকেই কারণে-অকারণে আমার মেয়েটিকে শাহনাজ মারধর করতেন।
গত ২১ নভেম্বর বিকেলে আরাফাতকে নিয়ে মেয়েটি পাশের বাড়ির শিশুদের সঙ্গে খেলতে যায়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে ধরে বাসায় নিয়ে মারধর করে শাহনাজ। একপর্যায়ে গ্যাসের চুলায় স্টিলের চামচ গরম করে মেয়েটির যৌনাঙ্গে ছ্যাঁকা দেয় শাহনাজ বেগম। তার চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা আসলে তাদের বাসায় ঢুকতে না দিয়ে চলে যেতে বলেন শাহনাজ। প্রতিবেশীদের সন্দেহ হলে গত ২১ নভেম্বর রাতেই মেয়েটিকে নিয়ে শাহনাজ বেগম তার বাবার বাড়ি নলচিড়া ইউনিয়নের কলাবাড়িয়া গ্রামে চলে যান।
শাহনাজ বেগম ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন। অন্যদিকে আমার স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। ঘটনার সময় স্ত্রী অন্য কক্ষে ছিল। তবে সে ওই বাড়ির আশ্রিতা হওয়ায় মেয়েকে নির্যাতনের পর প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি। গত বুধবার রাতে শাহনাজ বেগমের এক প্রতিবেশী বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। এরপর থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করি। পরে পুলিশের সহায়তায় শাহনাজ বেগমের বাবার বাড়ি থেকে মেয়েকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পর নির্যাতনের এসব কথা মেয়ে আমাকে ও পুলিশকে জানায়।
গৌরনদী মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. তৌহিদুজ্জামান বলেন, অভিযোগ পেয়ে পুলিশের একটি দল শাহনাজ বেগমের বাবার বাড়িতে তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে। পাশাপাশি শাহনাজ বেগমকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
নির্যাতনের শিকার শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছে এবং সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।