বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় ‘রেড ক্রিসেন্ট মাতৃসদন’ ক্লিনিকে আয়াদের চিকিৎসায় সীমা বেগম (৩৫) নামে এক প্রসূতি ও তার গর্ভের সন্তানের মৃত্যু হয়েছে।
আজ(০৯ নভম্বের) দুপুর দেড়টার দিকে পুলিশ
অভিযুক্ত ২ আয়াকে আটক করেছে। ক্লিনিকটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
সীমা বেগমের স্বজনরা বলেন, সীমার প্রসবব্যথা উঠলে স্বামী মন্টু বাহাদুর আজ সকাল ৭টার দিকে পশ্চিম বাগধা রেড ক্রিসেন্ট মাতৃসদন ক্লিনিকে নিয়ে যান।
ক্লিনিকের আয়া রাশিদা বেগম ও মায়া বেগম গৃহবধূর চিকিৎসা দেন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই তারা গৃহবধূর শরীরের স্যালাইন পুশ করেন। কিছুক্ষণ পর সীমা বেগম ও তার গর্ভের সন্তানের মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর এ বিষয়টি সীমার স্বামী ও স্বজনদের কাছে গোপন রাখেন ২আয়া। সীমা বেগমকে এরপর অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ক্লিনিক থেকে তারা পালিয়ে যান।
সীমার স্বামী মন্টু বাহাদুর অভিযোগ করেছেন, রেড ক্রিসেন্টের মাতৃসদন ক্লিনিকের ২আয়ার ভুল চিকিৎসায় আমার স্ত্রী মারা গেছে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সীমাকে ২আয়া অন্য কোথাও নিয়ে যেতে বলেন। অন্য হাসপাতালে নেয়ার অনেক আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। স্ত্রী হত্যার বিচারের জন্য থানায় মামলা করব।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বখতিয়ার আল মামুন জানান, উপজেলায় বৈধ যতগুলো বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক রয়েছে ওই তালিকায় রেড ক্রিসেন্ট মাতৃসদনের নাম নেই। অনুমোদন ছাড়া কীভাবে তারা রোগী ভর্তি ও চিকিৎসা দিয়েছেন তা নিয়ে তদন্ত হওয়া দরকার। ক্লিনিকের কাগজপত্রসহ কার্যক্রম পরিদর্শনের জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করা হয়েছে। পাশাপাশি উপজেলা স্যানিটারি পরিদর্শক সুকলাল সিকদারকে সেখানে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা স্যানিটারি পরিদর্শক সুকলাল সিকদার জানান, রেড ক্রিসেন্ট মাতৃসদন ক্লিনিক পরিদর্শনে গেছি। ক্লিনিক পরিচালনার জন্য তাদের বৈধ কাগজপত্র বা কোনো চিকিৎসক ও নার্স ছিল না। পরে ২ আয়াকে পুলিশ সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়।
আগৈলঝাড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দু রব হাওলাদার জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানা যায় ওই ক্লিনিকে চিকিৎসক ছিলেন না। একজন নার্স সেখানে চিকিৎসা দেন। তবে সকাল থেকে ওই নার্সও ক্লিনিকে অনুপস্থিত ছিলেন। নার্সের অনুপস্থিতিতে ২আয়া সীমা বেগমকে চিকিৎসা দেন। এ ঘটনায় ২আয়াকে আটক করা হয়েছে। পাশাপাশি সীমা বেগমের স্বামী মন্টু বাহাদুরকে মামলা করতে বলা হয়েছে।