গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের ‘গণহত্যা’ বন্ধে ব্যর্থতা এবং এই বর্বরতায় প্ররোচনার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নামে মামলা দায়ের হয়েছে। এতে আসামি করা হয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনকেও।
গত ১৩ নভেম্বর ক্যালফোর্নিয়ার ফেডারেল আদালতে মামলাটি দায়ের করেছে নিউইয়র্কভিত্তিক নাগরিক স্বাধীনতা গ্রুপ সেন্টার ফর কনস্টিটিউশনাল রাইটস (সিসিআর)। ফিলিস্তিনের বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা, গাজায় বসবাসকারী ফিলিস্তিনিরা এবং অবরুদ্ধ উপত্যকায় থাকা মার্কিন নাগরিকদের স্বজনদের পক্ষে মামলাটি দায়ের করেছে সিসিআর।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে প্রথম হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। এতে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। এরপর থেকে গাজায় প্রতিশোধমূলক হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে এ পর্যন্ত ১১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন, যার মধ্যে প্রায় অর্ধেকই শিশু। এই সংঘাতে ইসরায়েলকে অস্ত্র-গোলাবারুদ দিয়ে সহায়তা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
বাইডেন ও দুই মন্ত্রীর নামে মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সরকারের অনেক নেতা পরিষ্কারভাবে গণহত্যার অভিপ্রায় প্রকাশ করেছেন এবং ফিলিস্তিনিদের ‘মানব জন্তু’ বলাসহ বিভিন্ন অমানবিক চরিত্রাঙ্কন করেছেন।
এই বিবৃতিগুলোকে যদি ফিলিস্তিনিদের ওপর ব্যাপক হত্যাযজ্ঞের সঙ্গে মেলানো হয়, তাহলে এটি ‘গণহত্যার সুস্পষ্ট প্রমাণ’ হয়ে ওঠে।
এছাড়া বিশ্বজুড়ে অসংখ্য আইনবিদ, অধিকার গোষ্ঠী এবং মানবতাবাদীরাও গাজায় ইসরায়েলি কর্মকাণ্ডকে ‘গণহত্যা’ বলে অভিহিত করেছেন।
সিসিআর বলেছে, গাজায় ইসরায়েলের নজিরবিহীন বোমা হামলা শুরুর পরপরই প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইসরায়েলিদের প্রতি ‘অটল’ সমর্থনের ঘোষণা দিয়েছিলেন, যা তিনি ও তার প্রশাসনের কর্মকর্তারা ক্রমাগত পুনরাবৃত্তি করেছেন। এমনকি ব্যাপক বেসামরিক হতাহতের ঘটনা এবং ইসরায়েলি গণহত্যামূলক বক্তব্য বেড়ে যাওয়া সত্ত্বেও তাদের সামরিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক সমর্থন দিয়ে সহায়তা করেছেন।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র ও শক্তিশালী সমর্থক, সেই সঙ্গে সবচেয়ে বড় সামরিক সহায়তা প্রদানকারী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তার বৃহত্তম প্রাপক ইসরায়েল। চাইলে এ কারণে ‘ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড’ চালিয়ে যাওয়া থেকে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের আটকাতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।
সূত্র: আল-জাজিরা